যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্ট এ বছরের ২৮ মে তারিখে এক ঐতিহাসিক রায়ে ঘোষণা করেছে যে উন্মুক্ত স্থানে পুলিশের কর্মকাণ্ডের ভিডিও ধারণ করা আইনসম্মত।
ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট জাজ প্যাটি স্যারিস তার রায়ে বলেন:
“যেসব স্টেট আইনে প্রকাশ্য স্থানে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাগণসহ সরকারি কর্মচারিদের কার্যক্রম গোপনে অডিও ধারণ নিষিদ্ধ করে ফেডারেল আদালত সেসব আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করছে।“
[The Court declares [the state law used to bar such recordings] unconstitutional as it prohibits the secret audio recording of government officials, including law enforcement officers, performing their duties in public spaces]
যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফেডারেল আদালত প্রকাশ্য/উন্মুক্ত স্থানে পুলিশের কর্মকাণ্ড ভিডিও রেকর্ড করার নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করেছে।
[Federal courts across the United States have affirmed citizens’ right to video record police in public.]
সংবাদ সূত্র: Ben, Allen. (May 28, 2019). Federal Judge Rules it’s Legal to Secretly Record Police in Public Places. News Maven
মন্তব্য:
উন্মুক্ত স্থান বনাম ব্যক্তিগত স্থান: সরকারি কার্যালয় কি জনগণের জন্য উন্মুক্ত স্থান না-কি ‘ব্যক্তিগত‘ স্থান?
অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও ধারণ কি অনৈতিক?
সরকারি সকল কার্যালয় জনগণের, সেখানে জনগণের অবাধ প্রবেশাধিকার থাকবে। তার ভিতরে কোনো ‘গোপন‘ বা ‘খাস‘ কামরা থাকার কথা নয়। সরকারি কার্যালয়ে কোনো ‘গোপন‘ কর্মকাণ্ড চলতে পারে না। যারা সেখানে ব্যক্তিগত স্পেস (খাস কামরার) থাকার দাবি করছেন তাদের নিকট জবাব চাইতে হবে যে জনগণ (প্রকারান্তরে সংসদ আইনের/বিধি-বিধানের মাধ্যমে) তাদের ‘ব্যক্তিগত যৌন কর্মকাণ্ড‘ পরিচালনার জন্য সরকারি কার্যালয়ে এ ধরনের ‘গোপন‘ কক্ষ তৈরির অনুমতি দিয়েছে কি-না। যদি না দেওয়া হয়, যারা ‘ব্যক্তিগত‘, ‘একান্ত‘ এসব আলাপ করছেন – তারাও গণশত্রু, ওই ডিসির সমর্থক।
জেনে রাখুন যে দেশের সরকার আপনার-আমার অনুমতি ছাড়াই আমাদের কথোপকথন রেকর্ড করে – সেটি বেআইনি। এর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন যারা ব্যক্তিগত তত্ত্ব দিচ্ছেন? যে মানুষটি ভিডিওটি ধারণ করে ছড়িয়ে দিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রের জনগণের উপকার করেছেন। এভাবে রাষ্ট্রের কর্মে নিয়োজিত সকলের (রাজনীতিক, সরকারি কর্মচারি থেকে রাষ্ট্র থেকে সুবিধা নেওয়া প্রত্যেকের) অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিডিও হওয়া উচিত ও তা ছড়িয়ে দেওয়া উচিত – এটিই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর চরিত্র (যেটি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালত পরিষ্কার করেছে)। যারা ভিডিও‘র পেছনের লোকটিকে শাস্তি দেওয়ার কথা বলছেন তারা প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের কর্মচারীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুরক্ষা দিতে চান, সেগুলো প্রকাশ হয়ে পড়ুক তা চান না, নিপীড়নবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে চান।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে আমি আমাদের বিখ্যাত মানবাধিকার কর্মী মহোদয়াকে প্রশ্ন করতে চাই বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত আইনের ব্যাখ্যাটি কী হওয়া উচিত? কোনটি ব্যক্তিগত বিষয় আর কোনটি জনগণের/সরকারি বিষয়? একজন সরকারি কর্মচারি/কর্মকর্তা তাঁর বাসায় ব্যক্তিগত স্পেস দাবি করতে পারেন, কিন্তু সরকারি কার্যালয়ে তিনি জনগণের নিয়োজিত একজন কর্মচারি এবং যতক্ষণ তিনি তাঁর কার্যালয়ে অবস্থান করবেন জনগণের সেবায়, তাদের নজরদারিতে নিয়োজিত থাকার কথা [টয়লেট বা বাথরুমে গেলে ভিন্ন কথা :)]