জয়দেশে নতুন রাজনীতি প্রতিষ্ঠা: কর্মকৌশল ১

দালাল মিডিয়াকে ডিলেজিটিমাইজ করা। একটি টোটালিটেরিয়ান রাষ্ট্রে সমাজের সকল অংশে অবৈধ শাসকদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা পায়। মিডিয়া এর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অবৈধ শাসকগণ প্রোপাগাণ্ডার একচেটিয়াত্ব নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমের কর্তৃত্ব নিজের হাতে নিয়ে নেয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো জয়দেশেও এই কর্তৃত্ব নেওয়া হয়েছে গণমাধ্যমের মালিকানায় ও সংবাদ প্রকাশে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, এবং সংবাদজীবীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে (প্লট, ফ্ল্যাট, বিদেশ ভ্রমণ, ব্যবসায়িক সুবিধা প্রদান)। সাংবাদিকদের মধ্যে যাদেরকে কেনা যায়না তাদেরকে চরম সন্ত্রস্ত করে রাখা হয় (জেল, জরিমানা, গুম-খুন প্রভৃতি দিয়ে।)

এমতাবস্তায় শাসক গোষ্ঠীর কর্তৃত্বে চ্যালেঞ্জ আসতে পারে এরূপ সকল চেষ্টাকে রুখে দিতে দালাল মিডিয়া ও অনুগত সাংবাদিকগণ শাসক গোষ্ঠীর অপ্রপ্রচার যন্ত্র হিসেবে কাজ করে। আপনি যত সৎ উদ্দেশ্য নিয়েই রাজনীতিতে নামেন না কেন, যখনই এই টোটালিটেরিয়ান রেজিম আপনাকে হুমকি মনে করবে, তখনই আপনি ‘জঙ্গি‘, ‘মৌলবাদী‘, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি‘, ‘নারী নির্যাতনকারী‘, ‘মাছ চোর‘-সহ যেকোনো অপবাদ আপনার জন্য তৈরি হয়ে যাবে। এখানে তৃতীয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে রাষ্ট্রের লাঠিয়াল বাহিনী আপনাকে ধরে নিয়ে আসবে ও আপনার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে, দালাল মিডিয়ায় আপনার বিরুদ্ধে পৃষ্ঠার-পর-পৃষ্ঠা বিশেষ ‘অনুসন্ধানী‘ প্রতিবেদন লিখা শুরু হবে, টেলিভিশনের ‘টক-পয়জন‘ শো গুলোতে দালাল সেবাদাস শিক্ষক/সাংবাদিক/বিশেষজ্ঞদের দিয়ে আপনার মুণ্ডুপাত করা হবে, এবং পরিশেষে সেবাদাস আদালতে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে।

এটাই টোটালিটেরিয়ান রাষ্ট্রের স্বরূপ। যেখানে উপর্যুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধ শাসকদের শাসনব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে সর্বাত্মক সহায়কের ভূমিকা পালন করে।

জয়দেশ অতীতে দেশী-বিদেশী বহু স্বৈরাচারের অধীনে ছিলো। কিন্তু এই পরিস্থিতি জয়দেশের জন্য একেবারেই নতুন। সুতরাং জয়দেশের নাগরিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কেবল অবৈধ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করাটাই যথেষ্ঠ নয়, বরং যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই অবৈধ শাসন ব্যবস্থার সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে তাদের প্রত্যেকের সামাজিক বৈধতা ও গ্রহণযোগ্যতাকে আগেই বিনষ্ট করে দিতে হবে যাতে তারা প্রতিরোধ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ না পায়।

পাশাপাশি যারা সৎ, নির্ভিক সংবাদকর্মী তাদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, কোয়ালিশন গঠন আবশ্যক।

তবে মোটাদাগে যেহেতু গণমাধ্যম আর্কিটেকচারেই পঁচন ধরেছে, পুরো ব্যবস্থাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে দিতে হবে। সামাজিক গণমাধ্যমের যুগে বিকল্প পন্থায় জনগণের সাথে যোগাযোগের সুযোগ রয়েছে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান